পদ কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি। উদাহরণসহ ব্যাখা।

pod

বিভক্তি যুক্ত শব্দকে পদ বলে।অন্যভাবে বলা যায়, বাক্যে ব্যবহ্রত প্রত্যেকটি শব্দকেই বলা হয় পদ।

পদের শেণিবিভাগঃ

পদ প্রধানত দুই প্রকার। যথাঃ

            ০১. নাম পদ।

            ০২. ক্রিয়া পদ।

নাম পদঃ নাম বা শব্দ শেষে শব্দবিভক্তি যোগে গঠিত পদকে নামপদ বলে। নামপদ চার প্রকার ।যথাঃ

১.          বিশেষ্য।

২.         বিশেষণ।

৩.         সর্বনাম।

৪.         অব্যয়।

ক্রিয়া পদঃ

যে পদ দ্বারা কোনো কাজ করা বুঝায় তাকে বলা হয় ক্রিয়াপদ বলে।

সুতরাং পদ পাঁচ প্রকারঃ

১.          বিশেষ্য।

২.         বিশেষণ।

৩.         সর্বনাম।

৪.         অব্যয়।

৫.         ক্রিয়া।

বিশেষ্য পদঃ

কোনো কিছুর নামকে বলে বিশেষ্য । বাক্যে ব্যবহ্রত যেসব পদ দ্বারা কোনো ব্যাক্তি,জাতি,সমষ্টি,বস্তু,স্থান,কাল,ভাব বা গুণের নাম বোঝানো হয় তাদের বিশেষ্য পদ বলে।

১.          নামবাচক।

২.         জাতিবাচক।

৩.         বস্তুবাচক।

৪.         গুণবাচক।

৫.         সমষ্টিবাচক।

৬.         ভাববাচক।

বিশেষণ পদঃ

যা কোনো কিছুকে বিশিষ্ট করে তাকে বলে বিশেষণ । যে পদ বিশেষ্য কিংবা সর্বনাম পদের দোষ,গুণ,অবস্থা,সংখ্যা,পরিমান ইত্যাদি বোঝায় তাকে বিশেষণ পদ বলে।

বিশেষণ পদ প্রধানত দুই প্রকার ।

১.          নাম বিশেষণ।

২.         ভাব বিশেষণ।

সর্বনাম পদঃ

বিশেষ্যেব পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহ্রত হয় তাকে বলা হয় সর্বনাম।

সর্বনামের প্রকারভেদঃ

সর্বনামকে নিম্ন লিখিত ভাগে ভাগ করা যায়।

পুরুষবাচকঃ আমি,তুমি,সে,আপনি,তিনি,তুই।

সাকল্যবাচকঃ সব,সকল,উভয়,সর্ব।

সাপেক্ষঃ সে,তিনি,যাহা।

প্রশ্নবাচকঃ কে,কি,কী।

অন্যাদিঃ অন্য,পর,অপর।

আত্মবাচকঃ আপনি,নিজে,স্বয়ং,খোদ।

ব্যতিহারিকঃ আপনা আপনি,আপোসে,নিজে নিজে,পরস্পর।

সামীপ্যবোধকঃ এ,ইহা,ইনি।

পরোক্ষবোধকঃ ও,উহা,উনি।

অব্যয় পদঃ

ব্যয় মানে পরিবর্তন। এই পরিবর্তন হচ্ছে বচনে,লিঙ্গে ও বিভক্তিতে কিন্তু যে পদে বচনে, লিঙ্গে ও বিভক্তিতে কোনো পরিবর্তন ঘটে না,তা অব্যয়।সাধারণত ভাবে বলা যায় যে, যার কোন পরিবর্তন হয় না অর্থাৎ যা অপরিবর্তনীয় শব্দ তাই অব্যয়।

বাংলা ভাষায় তিন প্রকার অব্যয় শব্দ রয়েছে।

খাটি বাংলা অব্যয় শব্দঃ আর, আবার,ও হ্যাঁ,না।

বিদেশি অব্যয় শব্দঃ আলবত,বহুত,খুব,শাবাশ,খাসা,মাইরি,মারহাবা।

তৎসম অব্যয় শব্দঃ যদি,তথা,সদা,বরং,এবং,সুতরাং,আপাতত,বস্তুত।

ক্রিয়া পদঃ

যে পদ দ্বারা কোনো কাজ সম্পাদন করা বোঝায় তাকে ক্রিয়াপদ বলে।

যেমনঃ পলাশ বই পড়েছে।

’পড়েছে’ দ্বারা কোনো কাজ সম্পাদন করা বোঝাচ্ছে বলে এটি ক্রিয়াপদ।

ক্রিয়াপদের প্রকারভেদঃ

ক্রিয়াপদ বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়।যথাঃ

ভাব প্রকাশের রীতি অনুসারেঃ

১.সমাপিকা ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়াপদ বাক্যের পূর্ণতা বা পরিসমাপ্তি ঘটায় তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।

২.অসমাপিকা ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের পরিসমাপ্তি ঘটে না বক্তার কথা অস্পূর্ণ থেকে যায় তাকে অসমাপিকা বলে।

কর্ম অনুসারেঃ ক্রিয়ায় কর্মের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি অনুসারে ক্রিয়াপদ ছয় প্রকার ।যথাঃ

১.সর্কমক ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়া কর্ম থাকে তাকে সর্কমক ক্রিয়া বলে।

২.অকর্মক ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়ার কর্ম থাকে না তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে।

৩.দ্বিকর্মক ক্রিয়াঃ কোনো কোনো ক্রিয়ার দুটি কর্ম থাকতে পারে এ রকম ক্রিয়ার নাম দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে।

৪.প্রযোজক ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়া একজনের প্রযোজন বা চালনা অন্য কর্তৃক অনুষ্ঠিত হয় সেই ক্রিয়াকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে। যেমনঃ মা শিশুটিকে চাঁদ দেখাচ্ছেন। এখানে দেখাচ্ছেন হলো প্রযোজক ক্রিয়া।

৫.যৌগিক ক্রিয়াঃ একটি সমাপিকা ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া যদি একএে একটি বিশেষ বা সম্প্রসারিত অর্থ প্রকাশ করে তবে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। যেমনঃ ঘটনাটা শুনে রাখ।

Leave a Comment