এক বা একাধিক বর্ণ মিলিত হয়ে যদি কোন অর্থ প্রকাশ করে তাকে শব্দ বলে।
শব্দের শ্রেণিবিভাগঃ
শব্দকে প্রধানত তিন শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়। যথাঃ
১.গঠন অনুসারে।
২.অর্থ অনুসারে।
৩.উৎপত্তি অনুসারে।
গঠন দিক হতে শব্দের শ্রেণিবিভাগঃ
১.মৌলিক শব্দ।
২.সাধিত শব্দ।
মৌলিক শব্দঃ
যে শব্দকে বিশ্লেষণ করা যায় না এবং স্বয়ংসম্পন্ন অর্থ প্রকাশ করে তাকে মৌলিক শব্দ বলে। যেমনঃ হাত, ফুল ,বই,মুখ,গোলাম , ভাই ,মাছ , গোলাপ ইত্যাদি।
সাধিত শব্দঃ মৌলিক শব্দ বা ধাতু প্রকৃতি সঙ্গে উপসর্গ বা প্রত্যয় যোগে কিংবা সমাসনিষ্পন্ন হয়ে যেসব শব্দ গঠিত হয় তাকে সাধিত শব্দ বলে।
যেমনঃ উপসর্গযোগে – পরাপয় ,উপকার।
প্রত্যয়যোগে – চলন্ত , ঢাকাই।
সমাসযোগে – নীল যে পদ্ম=নীলপদ্ম।
শব্দের অর্থগত শ্রেনিবিভাগঃ
অর্থ অনুসারে শব্দকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় । যথাঃ
১. যৌগিক শব্দ।
২. রঢ়ি শব্দ ।
৩. যোগরড় শব্দ।
যৌগিক শব্দঃ
যেসব শব্দ প্রকৃতি ও প্রত্যয় যোগে গঠিত হয় এবং প্রকৃতি ও প্রত্যয় বিশ্লেষণ করলে যে সকল শব্দ অর্থ পাওয়া যায় তাকে যৌগিক শব্দ বলে।
যেমনঃ
গৈ + অক = গায়ক ,
কৃ + তব্য = কর্তব্য,
উৎপত্তি অনুসারে শব্দের শ্রেণিবিভাগ ঃ
উৎপত্তি অনুসারে শব্দকে পাচঁ ভাগে ভাগ করা হয়।
যথাঃ
১.তৎসম।
২.অর্ধ-তৎসম।
৩.তদ্ভব।
৪.দেশি ।
৫.বিদাশি।
তৎসমঃ
যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে কোনো রুপ পরিবর্তন ছাড়াই সরাসরি বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে, সেসব শব্দকে বলা হয় তৎসম শব্দ।
যেমনঃ চন্দ্র,সূর্য,নক্ষএ,ভুবন,ধর্ম,পএ,পুষ্প,তলা,কর্ণ,নাসিক্য,মাতৃ,শক্তি,ইত্যাদি।
অর্ধ-তৎসমঃ
যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে কিছুটা বিকৃত হয়ে বাংলা ভাষায় গৃহীত ও ব্যবহ্রত হয়েছে তাকে অর্ধ-তৎসম শব্দ বলে।
যেমনঃ
তৎসম অর্ধ-তৎসম
শ্রাদ্ধ ছেরাদ্দ
শ্রী ছিরি
গ্রাম গেরাম
গৃহিণী গিন্নী
মিথ্যা মিছা
তদ্ভব শব্দঃ
যেসব সংস্কৃত শব্দ যুগ-যুগান্তর ধরে বিবর্তনের পথে প্রাকৃত অপভ্রংশের মধ্য দিয়ে পরিবর্তিত হয়ে বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে ও ব্যবহ্রত হয়েছে ,সেসব শব্দকে বলা হয় তদ্ভব শব্দ।
উদাহরণঃ
তৎসম অর্ধ-তৎসম তদ্ভব
কর্মকার কর্মআর কামার
চর্মকার চম্মআর চামার
মস্তক মস্তক মাথা
পাদ পাতœ পা
দেশি শব্দঃ
বাংলাদেশের আদি জনগোষ্ঠীর ভাষার যে শাব্দিক উপাদান এখানো বাংলা ভাষায় ব্যবহ্রত হয় সেগুলোকে দেশি শব্দ বলে।
জীবজন্তু ও পশুপাখি খেকশিয়াল,বাবুই,নেংটি,হাঁড়ি,হোল
মাছ টেংরা,চেলা,পারশে,পোনা,বাটা,লেঠা
অন্যান্য কুড়ি,ডাব,ঝোল,ডোম,মুড়ি,বাদুড়,আলু,ডেলা,
বড়শি,সড়কি,কোচঁ,ডুগি,টিকারা,দাবা,ডোবা,মাঠ,
বিদাশি শব্দঃ
বিভিন্ন বিদেশি ভাষা থেকে যেসব শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে এবং বিকৃত কিংবা অবিকৃত ভাবে ব্যবহ্রত হচ্ছে সেসব শব্দকে বিদেশি শব্দ বলা হয়। এসব শব্দ আরবি, ফারসি,ইংরেজি,ফরাসি,ওলন্দাজ ইত্যাদি।